আসসালামু আলাইকুম! আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। সম্মানিত পাঠকবৃন্দ সবাইকে আমাদের ট্রিক্সকাকা ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আমাদের আজকের এই পোস্টে জাতীয় পরিচয়পত্র সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করবো। আশাকরি পোস্টটি শেষ অব্দি পড়বেন।
বর্তমান সময়ে দেখা যাই ভোটার আইডি কার্ডে বিভিন্ন ধরনের ভূল পরিলক্ষিত হয়। এটা সাধারণ নির্বাচন অফিস কর্তৃক টাইপিং মিসটেক বা অন্যান্য ভূলের কারনে হয়ে থাকে। আর এই ভুল সংশোধন করতে হতে হয় নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার।
আমাদের আজকের পোস্টোর মাধ্যমে আমরা জানবো কিভাবে অনলাইনে খুব সহজে কিছু ডকুমেন্ট আপলোড করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র কিভাবে সংশোধন করবেন। আর কি কি কাগজপত্র লাগবে? এই পোস্টে আমরা সমস্ত বিষয় আলোচনা করবো।
ভোটার আইডি কার্ডের ধরণের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনারের নিয়ম অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ৪টি ক্যাটাগরি রয়েছে। আর এই সব ক্যাটাগরির জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র। যেটার মাধ্যমে কতৃপক্ষ সহজের বুঝতে পারে এটি সংশোধন করা প্রয়োজন।
আপনি কি নতুন ভোটার হয়েছেন? বা অনেক আগে ভোটার হয়েছেন? এবং দেখতে পারছেন যে ভোটার আইডি কার্ডে ভূল তথ্য দেওয়া হয়েছে। এখন সেগুলো সংশোধন করা উচিৎ। আসলে এটি যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করা প্রয়োজন তা না হলে ভবিৎষতে আরো বড় রকমের সমস্যায় পড়তে হতে পারে। আপনার ভোটার আইডি কার্ডে আরো ভুল আছে কিনা চেক করতে ক্লিক করুন এখানে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
সাধারণত ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ২-৩ টি কাগজপত্র জমা করলেই হয়ে যায়। তবে আপনি কয়েকটি কাগজপত্র বেশি জমা দিলে বেশি ভালো হয়। তবে এমন কাগজপত্র জমা দিতে হবে যেটা দেখে কর্তৃপক্ষে বুঝতে পারে এই এনআইডি কার্ড সংশোধন করা প্রয়োজন। তবে যে কাগজপত্র গুলো অবশ্যই জমা দিতে হয় সেগুলো হলো- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন। কমপক্ষে এই দুইটি প্রমাণপত্র অবশ্যই আপলোড করা উচিত।
১. নামের বানান ও আংশিক পরিবর্তন |
---|
এসএসসি বা সমমান/ বা তার উর্দ্ধে কোন সনদ; |
জন্ম নিবন্ধন; |
ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে); |
সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ; |
সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন; |
এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি; |
বিবাহের কাবিন নামা। |
(বিঃদ্রঃ, এখানে তালিকার ডকুমেন্টগুলো যে কোন এক বা একাধিক ডকুমেন্ট হলেই চলবে)
২. বাংলা নাম অনুসারে ইংরেজি বা ইংরেজি নাম অনুসারে বাংলা
বর্তমান ভোটার আইডি কার্ডের বাংলা নাম অনুসারে ইংরেজি নাম সংশোধন অথবা, ইংরেজি নাম অনুসারে বাংলা নাম সংশোধন করতে ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হবে।
৩. নাম সম্পূর্ণ অংশ পরিবর্তন |
---|
এসএসসি বা সমমান/ বা তার উর্দ্ধে কোন সনদ; |
জন্ম নিবন্ধন; |
ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে); |
হলফ নামা; |
সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ; |
সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র; |
এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি; |
বিবাহের কাবিন নামা; |
তদন্ত প্রতিবেদন; |
উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন। |
৪. পিতা ও মাতার নাম পরিবর্তন
ভোটার আইডি কার্ডে পিতা/মাতার নামের আংশিক সংশোধন করতে প্রয়োজন হবে;
পিতা ও মাতার নাম পরিবর্তন |
---|
এসএসসি বা সমমান/ বা তার উর্দ্ধে কোন সনদ; |
জন্ম নিবন্ধন; |
ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে); |
হলফ নামা; |
সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ; |
সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র; |
এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি; |
বিবাহের কাবিন নামা; |
তদন্ত প্রতিবেদন; |
উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন। |
৫. স্বামী-স্ত্রীর নাম সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্রে স্বামী-স্ত্রীর নাম সংশোধন করতে প্রয়োজন হবে,
স্বামী-স্ত্রীর নাম সংশোধন |
---|
তালাক নামা বা ডিভোর্স পেপার এবং নতুন বিবাহের কাবিন নামা |
সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ |
সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন |
অথবা, অন্যান্য প্রমাণ |
জন্ম তারিখ সংশোধন করতে কি কি লাগে
১. জন্ম তারিখ সংশোধন (সকল ক্ষেত্রে)
জন্ম তারিখ সংশোধন |
---|
এসএসসি বা সমমান/ বা তার উর্দ্ধে কোন সনদ বা রেজিস্ট্রেশন কার্ডের সত্যায়িত অনুলিপি (উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট প্রযোজ্য নয়) |
পাসপোর্ট |
ড্রাইভিং লাইসেন্স |
জন্ম সনদ |
সিভিল সার্জন কর্তৃক বয়স প্রমাণের রেডিওলজিক্যাল মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট |
চেয়ারম্যান কর্তৃক পারিবারিক সনদ (পরিবারের সকল সদস্যের নাম, পিতা-মাতা, ভাই বোনের ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর এবং জন্মের ক্রম উল্লেখসহ |
পেনশন বা অবসর ভাতা বইয়ের সত্যায়িত ফটোকপি |
সার্ভিস বই/ এমপিও শীটের কপি/ চাকরীর আইডি/ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অফিস স্মারক সম্বলিত পত্র |
ভোটার আইডি কার্ডে ঠিকানা সংশোধন করতে কি কি লাগে
ঠিকানা সংশোধন |
---|
সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত সনদ |
জমির দলিল |
ইউটিলিটি বিল |
জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট |
অন্যান্য প্রমাণ |
ভোটার আইডি কার্ডে বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন
বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন |
---|
বিবাহের কাবিন নামা |
হিন্দু ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না হয়ে থাকলে উভয় পক্ষ কর্তৃক প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এফিডেভিট |
সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ |
সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র |
বিবাহ বিচ্ছেদ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট |
স্বামী/স্ত্রীর মৃত্যুর সনদ |
অথবা, অন্যান্য প্রমাণ |
ছবি, স্বাক্ষর, আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশ পরিবর্তন
জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি, স্বাক্ষর, আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশ পরিবর্তনের জন্য, স্ক্যানারের সাহায্যে কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডারে আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে একই ব্যক্তি নিশ্চিত হতে হবে।
অথবা, এসব তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী একই ব্যক্তি মর্মে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার প্রত্যয়ন লাগতে পারে।
আপনার মোবাইল থেকেই অনলাইনে আবেদন করেই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে পারছেন।
👉👉নতুন ভোটার হওয়ার ১১ নং ফরম PDF ডাউনলোড
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠ্যবৃন্দ আশা করি ভোটার আইডি কার্ড/জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে,কিভাবে অনলাইনে আবেদন করা যায়, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আজকের লেখাটি এখানে সমাপ্ত ঘোষণা করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।