অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম | E Passport application Process - Applying e-Passport Online

অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম  E Passport application Process - Applying e-Passport Online


আসসালামু আলাইকুম! আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। সম্মানিত পাঠকবৃন্দ সবাইকে আমাদের ট্রিক্সকাকা ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আমাদের আজকের এই পোস্টে অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করবো। আশাকরি পোস্টটি শেষ অব্দি পড়বেন।


আমাদের আজকের পোস্টটি পড়লে আশাকরি অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন সম্পর্কে সমস্ত কিছু জেনে যাবেন। 


পাসপোর্ট কি?

পাসপোর্ট হলো একজন নাগরিকের জাতীয়তা ও পরিচয় বহনকারী একটি সরকারি নথিপত্র। যা একজন নাগরিকের অন্যান্য দেশে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পাসপোর্টে গ্রাহকের নাম,ছবি,জন্মতারিখ,ঠিকানা,জাতীয়তা,পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারী ই পাসপোর্ট এর যুগে প্রবেশ করেছে। প্রত্যেক নাগরিকের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট তৈরি করা হয়ে থাকে।


বর্তমান সময়ে আপনি ঘরে বসে খুব সহজে ই পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। তবে অনলাইনে আবেদন করার পূর্বে কিছু বিষয় আপনাকে  আগে থেকে জেনে নিতে হবে। তা না হলে পরবর্তী সমস্যায় পড়তে পারেন। ই পাসপোর্ট করার নিয়মাবলি,পাসপোর্ট করতে কেমন খরচ হয়,পাসপোর্ট হাতে পেতে কত সময় লাগে তা আগে থেকে জেনে নেওয়া উচিৎ। আর একটা বিষয় ভালোভাবে মনে রাখবেন, অনলাইনে আবেদন করার পূর্বে ভালোভাবে দেখে তারপর আবেদন সাবমিট করবেন। কারণ একবার ভূল কিছু হয়ে গেলে পরবর্তী ভোগান্তির শেষ হবেনা। সংশোধন করার জন্য অনেক ভোগান্তি হবে। আর একটি মাত্র ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে একবারই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।


নিম্নে পাসপোর্টে কিছু প্রকারভেদ উল্লেখ করা হলো। আপনি আপনার পছন্দমত পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।

পাসপোর্ট সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে-

১. সাধারণ পাসপোর্ট (Ordinary Passport): সকল সাধারণ নাগরিকের জন্য।
২. অফিসিয়াল পাসপোর্ট (Official Passport): সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য।
৩. ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট (Diplomatic Passport): কূটনীতিকদের জন্য।
৪. জরুরী পাসপোর্ট (Emergency Passport): জরুরী পরিস্থিতিতে দ্রুত ভ্রমণের জন্য।

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

ই পাসপোর্ট আপনি ঘরে বসে অনলাইনে অথবা নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়। সরাসরি আবেদন করলে কিছু ডকুমেন্ট দিয়ে আবেদন পত্র জমা দিলেই হয়ে যাবে। আর অনলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে  আবেদন নিশ্পত্তি করতে হবে। তারপর পাসপোর্ট প্রসেসিং এ চলে যাবে, তারপর একে এক ভেরিফিকেশন,যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকরণ করে আপনার পাসপোর্টটি প্রস্তুত করা হবে। তাহলে চলুন জেনে নিই অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কি কি ধাপ অতিক্রম করতে হবে-

ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অতিক্রম করতে হবে-
  • প্রথমত আপনাকে ই পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে যেতে হবে এখানে ক্লিক করুন
  • Directly to online application অথবা Apply online”এখানে ক্লিক করুন
  • তারপর নির্দেশাবলী অনুসারে ফরম পূরণ করুন
  • ফি পরিশোধ করুন
  • ছবি তোলার ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন
  • নির্ধারিত তারিখে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করুন
  • পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ সংগ্রহ করুন.
এভাবেই আপনি কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে ই পাসপোর্টে আবেদন করতে পারেন। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-


ই পাসপোর্ট করার নিয়ম


ধাপ ১ঃ 

  • প্রথমে পাসপোর্ট পোর্টালের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ক্লিক করুন
  • এরপরে অনলাইন আবেদন / Apply Online লিংকে / Directly to online application ক্লিক করুন
  • আপনার বর্তমান ঠিকানার জেলা শহর এবং থানার নাম নির্বাচন করে ক্লিক করুন। প্রয়োজনে নিচের ছবিটি লক্ষ করুন।

E Passport application Process


ধাপ ২ঃ এই ধাপে মূলত আপনাকে একটি একাউন্ট ক্রেইট করতে হবে।

  • প্রথমে একটি ইমেইল দিন ও ক্যাপচা দিন ।
  • ই-পাসপোর্টের মূল ফরমটি সাবধানতার সাথে পূরণ করুন।
  • কন্টিনিউ করুন। প্রয়োজনে নিচের ছবিটি লক্ষ করুন।



ধাপ ৩ :
  • এই ধাপে পাসপোর্ট এর ধরন সেলেক্ট করতে হবে। 
  • সাধারণ নাগরিকের জন্য Ordinary Passport আর সরকারি চাকুরিজীবীদের জন্য Official Passport সেলেক্ট করতে হবে। 
  • Save and Continue বাটনে ক্লিক করুন। প্রয়োজনে নিচের ছবিটি লক্ষ করুন।


ধাপ ৪ :
  • এই ধাপে আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিন। মনে রাখবেন যেন কোনো ধরনের ভূল না হয়। যদি ভূল হয় তাহলে সেটি ঠিক করে নিন।
  • Save and Continue বাটনে ক্লিক করুন। প্রয়োজনে নিচের ছবিটি লক্ষ করুন।


ধাপ ৫ঃ  ঠিকানা নির্বাচন করুন
এই ধাপে আপনার ঠিকানা নির্বাচন করুন। এই ঠিকানায় আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হবে। যদি ভূল ভাল ঠিকানা দেন তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ঝামেলায় পড়তে পারেন। তাই ঝামেলায় না পরতে চাইলে সঠিক ঠিকানা দিন। তবে ঠিকানা দেওয়ার সময় আপনার ভোটার আইডি কার্ডের পেছনে যে ঠিকানা দেওয়া আছে সেই ঠিকানা দেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যের সাথে েমিল রেখে  ফর্ম পুরণ করুন।


আপনার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা একই হলে “Present Address same as Permanent” এটি নির্বাচন করে দিলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় একই ঠিকানা বসে যাবে।

বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হলে আপনার ঠিকানা আলাদা আলাদা ভাবে লিখতে হবে। ঠিকানা দুটি ভিন্ন হলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বা থানা ভেরিফিকেশন উভয় ঠিকানায় হবে।


ধাপ ৬ ঃ ID documents
এখানে একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে আমরা যেহেতেু নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করছি তাই এখানে  No, I don’t have any previous passport” এটি সেলেক্ট করবো। আর পূর্বে থেকে যদি কোনো ধরনের পাসপোর্ট আপনার থেকে থাকে তাহলে আপনার পাসপোর্ট এর ধরন অনুসারে অপশন বাছাই করতে হবে।

এরপর আপনার কাছে জানতে চাওয়া হবে আপনার অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট আছে কিনা। আমার যেহেতু অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট নেই তাই “No, I don’t have” এটি নির্বাচন করেছি। এরপর Save and Continue বাটনে ক্লিক করুন। প্রয়োজনে নিচের ছবিটি লক্ষ করুন।



ধাপ ৭ঃ পিতা মাতার তথ্য
এই ধাপে আপনার আপনার পিতা-মাতার তথ্য প্রদান করুন।
  • মাতা-পিতার নাম (এনআইডি কার্ড অনুসারে)
  • পিতা-মাতার NID Card নাম্বার
  • তাদের জাতীয়তা
  • পিতা মাতার পেশা
বিঃদ্রঃ মনে রাখবেন আপনার ভোটার আইডি কার্ড ও আপনার পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য গুলো যেন মিল থাকে এবং সেই মতাবেক তথ্য গুলো দিতে হবে।
ধাপ ৮ : বৈবাহিক অবস্থা
এই ধাপে আপনার বৈবাহিক অবস্থা সেলেক্ট করতে হবে। বৈবাহিক অবস্থার স্তলে আপনি ৪ ধরনের অবস্থা দেখতে পারবেন। আপনি আপনার অবস্থান সেলেক্ট করুন।
  • SINGLE
  • MARRIED
  • DIVORCED
  • WIDOWER or WIDOW
ধাপ ৯ : Emergency  Contact
এই ধাপে জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য আপনার তথ্য ব্যতীত অন্য একজনের তথ্য প্রদান করতে হবে (যেমন পিতা,মাতা,ভাই,বোন)। কবে পরিবারে যেকোনো সদস্যের মোবাই নম্বর ও ঠিকানা প্রদান করুন।
ধাপ ১০ : পাসপোর্টের ধরন বাছাই করুন
5 years  -  48 pages
5 years  -  64 pages
10 years  -  46 pages
10 years  - 64 pages
আপনি এখান থেকে আপনার পছন্দ মতো পাসেপোর্টের ধরণ পছন্দ করতে পারেন। তবে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ৪৮ পাতা বিশিষ্ট পাসপোর্ট ব্যবহার করা প্রয়োজন।
ধাপ ১১ : পাসপোর্টের ফি প্রদান করুন
  • এই ধাপে  আপনি পাসপোর্ট এর জন্য ফি প্রদান করুন।
  • ব্যাংক অথবা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন।
  • পেমেন্ট রিসিট গ্রহন করুন।
  • নিশ্চিত করুন যে আপনার সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
  • ফরম পূরণ শেষ হলে, “সাবমিট” করুন। 

ধাপ ১২ : 

  • আপনার সকল তথ্য পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সার্ভারে আপলোড করা হবে।
  • আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
  • আবেদন শেষে আপনাকে একটি ফর্ম প্রিন্টেবল আকারে দেওয়া হবে একই সাথে নিয়ে নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে। সাথে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হবে,

আশাকরি আমাদের আজকের পোস্টটি পড়ে অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম করতে কি কি লাগে এবং অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে খুব সহজে জানতে পেরেছেন। অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম জানতে যদি কোনো ধরনের সমস্যা হয় তাহলে আমাদের সাপোর্ট টিমের সাথে যোগাযোগ করুন। আশাকরি দ্রুত তম সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে।

শেষ কথা

সম্মানিত পাঠ্যবৃন্দ আশা করি অনলাইনে ই - পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে,কিভাবে অনলাইনে আবেদন করা যায়, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আজকের লেখাটি এখানে সমাপ্ত ঘোষণা করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

ট্যাগ: পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ কত টাকা,পাসপোর্ট আবেদন অনলাইন,পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ২০২৪,নতুন পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি ২০২৪,বাংলাদেশে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে,ই পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

Post a Comment

Previous Post Next Post